জোরপূর্বক বা বল প্রয়োগ করে অন্যের সম্পদ ছিনিয়ে নেওয়াকে ছিনতাই বলে। ছিনতাই একটি সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড। এতে সমাজের শান্তি বিনষ্ট হয়। মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে না। নিরপত্তাহীনতায় থাকে।
কুফল
ছিনতাই একটি জঘন্য সামাজিক অনাচার। এটি চুরি-ডাকাতি অপেক্ষা মারাত্মক। ছিনতাই সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করে। সামাজিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে। এর ফলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। মানুষের মূল্যবান অর্থ সম্পদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। ফলে সমাজে ও রাষ্ট্রে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়।
ছিনতাইকারী দুনিয়াতে ও আখিরাতে নির্মম শাস্তি ভোগ করবে। এ সম্পর্কে মহানবি (স.) বলেন,
مَنْ أَخَذَ شِبْرًا مِنَ الْأَرْضِ ظُلْمًا فَإِنَّهُ يُطَوَّقَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ سَبْعِ أَرْضِينَ
অর্থ: 'যে ব্যক্তি সামান্য পরিমাণ জমি ছিনতাই করে, কিয়ামতের দিন সাতগুণ জমি তার গলায় বেড়িরূপে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।' (বুখারি ও মুসলিম)
যে ছিনতাই করে তার পূর্ণ ইমান থাকে না। এ সম্পর্কে মহানবি (স.) বলেন, 'কোনো ব্যক্তি প্রকাশ্যে ছিনতাই ও লুটতরাজ করলে সে মুমিন থাকে না'
ছিনতাই বর্বর যুগের চরিত্রবিশেষ। ইসলাম এ বর্বরতাকে সমূলে উৎপাটন করার লক্ষ্যে ঘোষণা করেছে
لا ضَرَرَ وَلَا صِرَارَ فِي الْإِسْلَامِ
অর্থ: 'ইসলামি বিধানে না নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার নিয়ম আছে, না অন্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করার নিয়ম আছে।'
পবিত্র কুরআন মজিদে এবং মহানবি (স.)-এর হাদিসে ছিনতাই, ডাকাতি, লুটতরাজ ইত্যাদি অপকর্মের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন।
প্রতিকার
এ ধরনের সামাজিক অপরাধ, অনাচার, অত্যাচার থেকে আমাদের মুক্তি পাওয়া একান্ত প্রয়োজন। সেজন্য সামাজিক সচেতনতা প্রয়োজন।
মানুষকে ছিনতাই-এর কুফল সম্পর্কে সচেতন করা এবং কুরআন ও হাদিসের আলোকে এর অপকারিতা সম্পর্কে অবহিত করা প্রয়োজন।
অপরাধীদেরকে এরূপ সামাজিক অনাচার থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজনে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে।
সুষ্ঠু বিচারব্যবস্থা ও সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে এ ধরনের অনাচার সমাজ থেকে দূর হবে।
আমরা ছিনতাইয়ের কুফল অনুধাবন করব। এ ধরনের জঘন্য কাজে লিপ্ত হবো না। এ জঘন্য কাজ যারা করে তাদেরকে এ থেকে বিরত রাখতে চেষ্টা করব।
দলগত কাজ: শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে নিজেদের মধ্যে ছিনতাইয়ের কুফল আলোচনা করে এর প্রতিকারের উপায়গুলো পোস্টার লিখে শ্রেণিতে উপস্থাপন করবে। |
Read more